সুহবত
সুহবত শব্দটা অতিমাত্রায় সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ। সালাফের কিতাবাদিতে উসতাদ-ছাত্রের পরস্পরকে ‘সাহিব’ বা আসহাব শব্দে ব্যক্ত করতে দেখা যায়। যার অর্থ সঙ্গী, সাহচর্যপ্রাপ্ত ইত্যাদি। আমি বইপত্রের কাজ করতে গিয়ে অহরহ এই শব্দ দেখি আর আনন্দিত হই।
এই শব্দে যেমন উসতাদের প্রতি ছাত্রের তাজিম বুঝে আসে, তেমনি ছাত্রের প্রতি উসতাদের মহব্বতও প্রকাশ পায়। শব্দটা ব্যাপক, তাই দুদিকেই সমানুপাত ভারসাম্য ধরে রাখে। কিন্তু আমরা বর্তমানে উসতাদের মহব্বতকে কিছু ক্ষেত্রে একতরফা ভাবি। ফলে আমাদের শব্দচয়নও তেমন। ভাবনাও সংকীর্ণ। আমরা বলি, উসতাদের চরণতলেই ছাত্রের কল্যাণ। উসতাদের দিকনির্দেশনাতেই তার সার্বিক সফলতা। একপাক্ষিক এসব ভারী শব্দ চয়ন করে, আমরা মতানৈক্যের দরজা বন্ধ করে দিই। আমাদের শব্দই বলে, ছাত্রের কোনো মত থাকতে পারে না। সে স্বাধীনভাবে ভাবতে পারবে না, স্বাধীন মতামত দিতে পারবে না।
অথচ ব্যাপারটা এমন না। ইলমের তাওয়ারুস ও ইলমি মহলের আলফাজের সিলসিলা এমন ভাবনার বিরোধী। আমরা ইমাম মুহাম্মদ ও আবু ইউসুফকে আবুহানিফার সাহেবাইন বলি। শব্দই বোঝায়, ছাত্র হলেও ইমাম মুহাম্মদ ও আবু ইউসুফ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেন। কখনো সেটা উসতাদের বিপরীত হলেও, শব্দে সেটার প্রশ্রয় থাকছে। কিন্তু এখন ছাত্র মানে মুরিদ, ছাত্র মানে কর্মী। শব্দচয়ন ও উসতাদের প্রতি তাজিমের ভুল ব্যাখ্যা এবং আপাতপাক্ষিক এমন ব্যবহার আশঙ্কাজনক। আল্লাহ হেফাজত করুন!